লুটপাটে মরিয়া সরকার গ্যাসের পর বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করছে : রুহুল কবির রিজভী

লুটপাটে মরিয়া সরকার গ্যাসের পর বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করছে : রুহুল কবির রিজভী'
..........♣♣
গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির ঘোষনার পরপরই বিদ্যূতের মূল্য বৃদ্ধিরও ঘোষনা দিয়েছেন জ্বালানী ও বিদ্যূৎ প্রতিমন্ত্রী। সরকার এখন লুটপাটে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আর এ কারনেই গণবিরোধী সকল কর্মকান্ডে তারা লিপ্ত হয়ে পড়েছে' বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন মন্তব্য করেন। সংবাদ সম্মেলনের সম্পূর্ণ বক্তব্য নিম্নরূপ।
সুপ্রিয় সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা,আস্সালামু আলাইকুম। প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত হওয়ার জন্য সবাইকে জানাচ্ছি আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা। বন্ধুরা, আপনারা জানেন-গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির ঘোষনার পরপরই বিদ্যূতের মূল্য বৃদ্ধিরও ঘোষনা দিয়েছেন জ্বালানী ও বিদ্যূৎ প্রতিমন্ত্রী। সরকার এখন লুটপাটে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আর এ কারনেই গণবিরোধী সকল কর্মকান্ডে তারা লিপ্ত হয়ে পড়েছে। গ্যাস ও বিদ্যূতের মূল্য বৃদ্ধির ঘোষনার সাথে সাথে এর ব্যাড ইম্প্যাক্ট খুবই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সারাদেশের মানুষ এই ঘোষনার বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। ইতোমধ্যে জনস্বার্থের পরিপন্থী এই ধরনের ঘোষনায় বাসভাড়া, বাড়ীভাড়ার নোটিশ প্রদান শুরু হয়ে গেছে। দেশের শতকরা সাড়ে ৯৯ ভাগ মানুষ এই ঘোষনা প্রত্যাখান করেছে। দেশের মানুষের নিকট বর্তমান ভোটারবিহীন সরকারের কোন জবাবদিহিতা ও কর্তব্যবোধ নেই বলেই জনগণের ওপর জুলুম চালানো হচ্ছে, জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করেছে সরকার। যদি দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি ন্যুনতম ভালবাসাবোধ থেকে থাকে তাহলে আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র পক্ষ থেকে সরকারের নিকট আহবান জানাতে চাই-গণবিরোধী ও জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট কর্মকান্ড থেকে সরে আসুন এবং অবিলম্বে গ্যাস ও বিদ্যূতের মূল্য বৃদ্ধির অমানবিক ঘোষনা থেকে সরে আসুন। সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা, আপনারা জানেন-আগামী ০৬ মার্চ ২০১৭ বাগেরহাট জেলাধীন মোড়েলগঞ্জ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদের উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জনাব বদিউজ্জামান নোমিনেশন পেপার দাখিলের পূর্ব থেকে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা তার প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছে। হুমকির মুখে স্থানীয় নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে মনোনয়ন পত্র দাখিলে ব্যর্থ হয়ে তিনি জেলা নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে মনোনয়ন পত্র দাখিল করলেও নির্বাচনী প্রচারণায় তাকে প্রচন্ডভাবে বাধা দেয়া হচ্ছে। তার পোষ্টার, লিফল্টে, ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে অথচ প্রশাসনের নিকট অভিযোগ করা হলেও কোন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র পক্ষ থেকে এই ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বন্ধ করে নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও অবাধ করতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি করছি। সাংবাদিক বন্ধুগণ, সারাদেশের সড়ক-মহাসড়কগুলো এখন মৃত্যুর মিছিল ও আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও সড়ক দূর্ঘটনার বলি হচ্ছে একেকটি তাজা প্রাণ। দিনের পর দিন সড়কে দূর্ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেলেও তাতে টনক নড়ছে না সরকারের। গতকালও ঢাকার নয়াবাজার এলাকায় যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায়সাদিয়া হাসান নামে ২২ বছরের এক মেডিকেল ছাত্রী নিহত হয়েছেন। এভাবে প্রতিদিনই দেশের সড়কে মহাসড়কেভয়াবহ দূর্ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে। বিরোধী দল দমন এবং লুটপাট, দখলবাজী, টেন্ডারবাজীতে ব্যস্ত থাকার কারনে বর্তমান গণবিচ্ছিন্ন ও জবাবদিহিহীন সরকারের সড়ক দূর্ঘটনা সামাল দিতে কোন মাথাব্যথা নেই। গত জানুয়ারী মাসেই সারাদেশে সড়ক দূর্ঘটনায় ৪১৬ জন নিহত এবং এক হাজার ১২ জন আহত হয়েছেন। গত ডিসেম্বরের তুলনায় জানুয়ারীতে সড়ক দূর্ঘটনা বেড়েছে ৬৯টি। সড়ক দূর্ঘটনা অর্ধেকে নামিয়ে আনার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রায় বাংলাদেশ সই করলেও সুনির্দিষ্ট কোন কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে না। দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে বলে সরকার দাবি করলেও বাস্তবে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। পাল্লা দিয়ে যানবাহনের সংখ্যা বাড়ছে। সড়কগুলোতে ফিটনেসবিহীন গাড়ীর সংখ্যাধিক্য সমগ্র দেশবাসীকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়ার ক্ষেত্রেও কোন নিয়ম-নীতিকে তোয়াক্কা করাহচ্ছে না। যার ফলে সড়ক দূর্ঘটনা রোধ অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। বন্ধুরা, বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান জনাব গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী’র চট্টগ্রামের বাসভবনের সামনে থেকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ১৬ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আমি বিএনপি’র পক্ষ থেকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত বানোয়াট মামলা প্রত্যাহার করে শর্তহীন মুক্তির জোর দাবি করছি। বন্ধুরা, আমরা গতকাল নেত্রকোণার জেলার কেন্দুয়া উপজেলা সংঘটিত পুলিশ ও সরকারী দলের যৌথ সন্ত্রাসী তান্ডবের বিষয়ে অবহিত করেছি। সেই তান্ডব এখন সারা জেলাব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। জেলা পুলিশ সুপার বাবু জয়দেব চৌধুরীর নেতৃত্বে সারা নেত্রকোণা জেলা আজ আতঙ্কের জনপদে পরিণত হয়েছে। জেলার প্রতিটি উপজেলা থেকেই জেলার বিএনপি নেতাকর্মীদের কেন্দুয়ায় সংঘটিত ঘটনায় গ্রেফতার দেখানো হচ্ছে। নেতাকর্মীদের বাড়ীতে বাড়ীতে গিয়ে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা হানা দিচ্ছে এবং পরিবারের সদস্যদের সংগেঅশালীন আচরণকরছে। এ পর্যন্ত গোটা জেলায় ৪৭ জন বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র পক্ষ থেকে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য জনাব রফিক হিলালী এবং কেন্দুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়া দুলালসহ ২১৯ জন নেতাকর্মীদের নামে দায়েরকৃত বানোয়াট মামলা প্রত্যাহার এবং গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের শর্তহীন মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।

Comments

Popular posts from this blog

দেশের ৩১টি জেলার ও ৭৮টি উপজেলায় বিআরটিসির বাস চলাচল করছে

গাইবান্ধা-১ থেকে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পেলেন ব্যারিষ্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী

প্রান্তিক চাষীদের কৃষি প্রণোদনা হিসেবে ৩২ কোটি ৯০ লাখ টাকা