ফুল বিক্রি করে আয় হয়েছে ৮০০ কোটি টাকা

ফুলপিয়াসী নগরবাসীর প্রয়োজন মেটাতে গড়ে উঠেছে ফুলের বাজার। ফুল ব্যবসায়ীরা বলেন, সৌন্দর্যবর্ধনের ফুল অর্থনৈতিকবর্ধন ঘটাতেও কার্যকর ভূমিকা রাখছে। ২০ লাখ মানুষের কাছে ৮০০ কোটি টাকায় পৌঁছে দিচ্ছে ফুল। ফুল শুধু শোভাবর্ধন ও দর্শনীয় পণ্য হিসেবেই ব্যবহার হয় না। বরং এখন ফুল অর্থনৈতিক রপ্তানিযোগ্য পণ্য হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। ফুল চাষ ও এর বিপণনের সঙ্গে দেশে প্রায় ২০ লাখ মানুষ জড়িত। প্রাপ্ত তথ্যমতে, দেশে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ফুল উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৫৭ হাজার টন। ফুল বিক্রি করে আয় হয়েছে ৮০০ কোটি টাকা। এর আগের ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৫০ হাজার টন ফুল উৎপাদন হয়। ফুল বিক্রি থেকে আয় হয় ৭০০ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে ফুল বিক্রির থেকে আয় বেড়েছে ১০০ কোটি টাকা।
এভাবে প্রতি বছরই ফুল চাষের জমির পরিমাণ ও উৎপাদন বাড়ছে। সম্ভাবনাময় এ খাতকে আরও এগিয়ে নিতে সমন্বিত ফুলনীতি, ফুলের স্থায়ী বাজার এবং ফুল নিয়ে গবেষণার দাবি জানিয়েছেন ফুল ব্যবসায়ী ও চাষিরা। ফুলের বিপণন শহরকেন্দ্রিক বেশি। তবে এখন গ্রামাঞ্চলের ফুল বিকিকিনি হয়। করপোরেট দুনিয়ার প্রায় সব অনুষ্ঠানের অবিচ্ছেদ্য অংশ ফুল। রাজধানীতে ফার্মগেট ও শাহবাগ ফুলের সবচেয়ে বড় বাজার। এ ছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন বাজারেও ফুল বিক্রি হয়। ধানমন্ডি, গুলশান, বনানী, মতিঝিলসহ প্রায় সবখানেই রয়েছে ফুলের দোকান।
ফুলের বড় বাজার নগর হলেও সারা দেশে ফুল বিক্রি হয়। গ্রামাঞ্চলের বিয়ে, জন্মদিন, ধর্মীয়সহ বিভিন্ন উৎসবে ফুলের ব্যবহার হচ্ছে। দেশের সব জেলা ও উপজেলা শহর পর্যায়ে স্থায়ী ফুলের বাজার রয়েছে। স্থানীয় বাজারে অন্তত দুয়েকটি দোকান গড়ে উঠেছে। ওই সব দোকানের ফুলের সমারোহ খুব বেশি থাকে না। তবে চাহিদা পাওয়া গেলে ওই সব দোকানি তা সরবরাহ করেন। এভাবে দেশের সর্বত্র ফুলের বাজার ছড়িয়ে পড়ছে। বাংলাদেশে ১৯৮৩ সালে বাণিজ্যিকভাবে ফুলের চাষ শুরু হয়। বর্তমানে খুলনা বিভাগে সবচেয়ে বেশি প্রায় দুই হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে ফুল চাষহচ্ছে।
দেশে গাডিওলাস, গোলাপ ও রজনীগন্ধা ফুলের চাষ হয় সবচেয়ে বেশি। প্রতি হেক্টর জমিতে খাদ্যশস্য ও অর্থকরী ফসলের তুলনায় ফুল চাষ বেশি লাভজনক। যশোর, ঝিনাইদহ, সাভার ও চুয়াডাঙ্গাসহ ২৪ জেলায় ১০ সহস্রাধিক হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হচ্ছে বাণিজ্যিকভাবে।
যার প্রায় ৭০ শতাংশ ফুল উৎপাদন হয় ফুলরাজ্য হিসেবে চিহ্নিত যশোরের গদখালী এলাকায়। সংশ্লিষ্টরা জানান, রপ্তানিযোগ্য পণ্য হিসেবে এখনো পুরোপুরিভাবে স্বীকৃতি পায়নি ফুল। ফুল দ্রুত পচনশীল, বিধায় এগুলো রপ্তানিতে দ্রুতব্যবস্থা করা দরকার।
কিন্তু ফুল রপ্তানিনির্ভর দেশ বা অঞ্চলে আলাদা বিমানবন্দর থাকলেও বাংলাদেশে এরূপ ব্যবস্থা নেই। আর ফুল সংরক্ষণের জন্য নেই কোনো আলাদা হিমাগার।

Comments

Popular posts from this blog

দেশের ৩১টি জেলার ও ৭৮টি উপজেলায় বিআরটিসির বাস চলাচল করছে

গাইবান্ধা-১ থেকে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পেলেন ব্যারিষ্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী

প্রান্তিক চাষীদের কৃষি প্রণোদনা হিসেবে ৩২ কোটি ৯০ লাখ টাকা