প্রদর্শনীর দুই দিনে প্রায় ১০ কোটি টাকার রপ্তানির আদেশ পেয়েছে প্যারাগন

শনিবার জার্মানের ফ্রাংকফুর্টে শুরু হওয়া পাঁচ দিনব্যাপী ভোগ্যপণ্যের প্রদর্শনী ‘অ্যাম্বিয়েন্টি ফ্রাংকফুর্ট ২০১৭’ শীর্ষক প্রদর্শনীতে বাংলাদেশের ৩৮টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করছে। আগামী মঙ্গলবার এই প্রদর্শনী শেষ হবে। আয়োজক প্রতিষ্ঠান মেসে ফ্রাংকফুর্ট ছাড়াও এতে বাংলাদেশের রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) মাধ্যমে ১২টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করছে।মেলায় অংশগ্রহণকারী সিরামিক শিল্পের উদ্যোক্তারা জানায়, বিশ্বের শতাধিক দেশের প্রতিষ্ঠান ও ক্রেতা আসে এই প্রদর্শনীতে। ক্রেতাদের বেশির ভাগই বাংলাদেশি পণ্যের গুণগত মান এবং নকশার প্রশংসা করে। এমনকি দেশের কয়েকটি প্রতিষ্ঠান নিজের উৎপাদনের ৭০ শতাংশ ইউরোপের বাজারে সরবরাহ করছে।
তারা আরো জানায়, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই সারা বছরের প্রায় অর্ধেক কার্যাদেশ পায় এই প্রদর্শনী থেকে। তবে সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও গ্যাস, অবকাঠামো, ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদের হার এবং শুল্ক প্রতিবন্ধকতার কারণে পিছিয়ে পড়তে হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে শাইনপুকুর সিরমিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, ‘উদ্যোক্তারা ঝুঁকি নিয়ে দেশের সিরামিকশিল্পকে যেমন বিশ্ববাজারে পরিচয় করে দিচ্ছে, একই সঙ্গে দেশের ভাবমূর্তি তৈরিতে ইতিবাচকভূমিকা রাখছে। বলা যায়, এ মেলার মাধ্যমে বাংলাদেশের সিরমিকশিল্প সম্ভাবনার মহাসড়কে যাত্রা শুরু করল। ’হুমায়ুক কবির আরো বলেন, ‘আমাদের পণ্যের রপ্তানি বাজার বাড়াতে এ ধরনের প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করতে হয়। তা ছাড়া বাংলাদেশের সিরামিক পণ্য গুণগত মান, সৃজনশীল নকশা এবং দামেও বেশ সাশ্রয়ী। ’১৯৫৪ সালে বগুড়ায় তাজমা সিরামিকের মাধ্যমে বাংলাদেশে সিরামিকশিল্পের যাত্রা শুরু হয়। এরপর পিপলস সিরামিক, মুন্নু সিরামিক, শাইনপুকুর, ফার সিরামিক, প্যারাগন, আর্টিসান, গ্রেট ওয়াল, আরএকেসহ প্রায় ৫০টি প্রতিষ্ঠান নিয়ে দেশের সিরামিক শিল্প আজ সমৃদ্ধ। সিরামিক ও টাইলস বাংলাদেশের অন্যতম শিল্পে পরিণত হয়েছে।মুন্নু গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান ময়নুল ইসলাম বলেন, ‘মুন্নু সিরামিক গত ২৯বছর ধরে অ্যাম্বিয়েন্টি ফ্রাংকফুর্টে অংশগ্রহণ করছে। আমাদের প্রায় ২০০ কোটি টাকার সিরমিক পণ্যের উৎপাদন সক্ষমতা আছে। প্রতিবছরই বিশ্ববাজারে মুন্নুর ক্রেতা বাড়ছে। এর প্রধান কারণ পণ্যের গুণগত মান। তবে দেশের মানুষের সৃজনশীলতাকে কাজে লাগানো গেলে সিরামিক শিল্প আরো এগিয়ে যাবে। ’ময়নুল ইসলাম আরো বলেন, গত চার-পাঁচ বছর ধরে দেশীয় সিরামিক পণ্যের রপ্তানিকমছে। তবে আশার কথা, বিশ্ব রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে নেতিবচাক কোনো প্রভাব পড়েনি বরং ব্যবসা চাঙ্গা হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে নতুন বাজার। মেলায় চীনের ক্রেতারাও বাংলাদেশ থেকে সিরামিক পণ্য নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবে এই শিল্পের বড় প্রতিবন্ধকতা কারখানার গ্যাস সরবরাহ।ফার সিরামিকের পরিচালক ইমতিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘ফার সিরামিকের স্বপ্নদ্রষ্টা ইফতেখার উদ্দিন আহমেদের স্বপ্ন ছিল ইউরোপে পণ্য রপ্তানি করা। বর্তমানে ফার সিরামিকের উৎপাদিত পণ্যের ৭০ শতাংশই ইউরোপের বাজারে রপ্তানি হচ্ছে। এক দশক ধরে এই মেলায় অংশগ্রহণ করছে ফার সিরামিক। ’প্যারাগণ সিরামিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবেদিন নওশান বলেন, বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠান এই মেলায় অংশগ্রহণ করায় বিশ্ববাজারের চাহিদা বুঝতে আমাদের বেশ সুবিধা হয়। তবে মেলায় অংশগ্রহণের ফলে প্রচলিত বাজার ছাড়াও ব্রাজিল, লেবানন, তুরস্ক, ভারত এবং নরওয়ের মতো নতুন বাজারগুলোতে আমাদের পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। ’আবেদিন নওশান আরো বলেন, তাঁর প্রতিষ্ঠান এইচ অ্যান্ড এম, আইকেইএ, চার্চিলের মতো ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করছে। ফলে ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিশ্বেরঅনেক নতুন নতুন বাজারেও যাচ্ছে তাঁদের পণ্য। প্রদর্শনীর দুই দিনে প্রায় ১০ কোটি টাকার রপ্তানির আদেশ পেয়েছে প্যারাগন

Comments

Popular posts from this blog

দেশের ৩১টি জেলার ও ৭৮টি উপজেলায় বিআরটিসির বাস চলাচল করছে

গাইবান্ধা-১ থেকে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পেলেন ব্যারিষ্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী

প্রান্তিক চাষীদের কৃষি প্রণোদনা হিসেবে ৩২ কোটি ৯০ লাখ টাকা