চলতি বছরের একুশে পদকপ্রাপ্তদের মাঝে একুশে পদক বিতরণ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে

চলতি বছরের একুশে পদকপ্রাপ্তদের মাঝে একুশে পদক বিতরণ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে
--------------♦--♦--
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাঙালি জাতির যখন যা কিছু অর্জন তা অনেক ত্যাগের মধ্যদিয়ে, সংগ্রামের মধ্যদিয়েই আমাদের অর্জন করতে হয়েছে। কাজেই সেই অর্জনকে আমাদের ধরে রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘কোনভাবেই যেন এই অর্জনগুলোকে কেউ আবার ভবিষ্যতে নস্যাৎ করতে না পারে, এ বিষয়ে সকলকে সচেতন থাকতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে চলতি বছরের একুশে পদক প্রাপ্তদের মাঝে একুশে পদক বিতরণ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ আহবান জানান।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ২০১৭ সালের একুশে পদক বিজয়ী ১৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হাতে এই পদক তুলে দেন।
ভাষা আন্দোলন, শিল্পকলা (সঙ্গীত, চলচ্চিত্র, ভাস্কর্য, নাটক ও নৃত্য), সাংবাদিকতা, গবেষণা, শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, সমাজসেবা, ভাষা ও সাহিত্যে এ সম্মাননা দেয়া হয়। পুরস্কার হিসেবে একটি সনদপত্র, স্বর্ণপদক এবং দুই লাখ টাকার চেক বিজয়ীদের হাতে তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. ইব্রাহিম হোসেন খান। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম পদক বিতরণ অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন এবং পদক বিজয়ীদের সাইটেশন পাঠ করেন।অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাগণ, বিচারপতিবৃন্দ সংসদ সদস্যবৃন্দ, কূটনৈতিক মিশনের সদস্যবৃন্দ, পদস্থ সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পদক বিজয়ীরা হচ্ছেন- ‘অপরাজেয় বাংলার’ ভাস্কর সৈয়দ আব্দুল্লাহ খালিদ, প্রযুক্তিবিদ, গবেষক অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী এবং দৈনিক জনকন্ঠের নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায়, অধ্যাপক ড. শরিফা খাতুন, শিল্পকলায় (সঙ্গীত) সুষমা দাস, ওস্তাদ আজিজুল ইসলাম (বংশীবাদক, শাস্ত্রীয় সঙ্গীত), জুলহাস উদ্দিন আহমেদ (স্বাধীন বাংলা বেতারের শিল্পী), শিল্পকলায় (চলচ্চিত্র) তানভীর মোকাম্মেল (লেখক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা), শিল্পকলায় (নাট্যশিল্পী) সারা যাকের, গবেষণায় সৈয়দ আকরম হোসেন, শিক্ষায় প্রফেসর ইমেরিটাস আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীন (চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও লেখক), সাংবাদিকতায় আবুল মোমেন, সমাজসেবায় অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হাসান (আইপিজিএমআর’কে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী), ভাষা ও সাহিত্যে সুকুমার বড়ুয়া (ছড়াকার), শিল্পকলায় (নৃত্য) শামীম আরা নীপা এবং শিল্পকলায় (সংগীত) রহমতউল্লাহ আল মাহমুদ সেলিম ওরফে মাহমুদ সেলিম (গণসঙ্গীত শিল্পী, বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডসহ স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের প্রতিবাদকারী) এবং ভাষা ও সাহিত্যে (মরণোত্তর) কবি ওমর আলী। বিজয়ী সকলেই প্রধানমন্ত্রীর নিকট থেকে পদক গ্রহণ করেন। মরণোত্তর কবি ওমর আলীর পক্ষে তার ছেলে মো. রফি মনোয়ার আলী প্রধানমন্ত্রীর নিকট থেকে পদক গ্রহণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী একুশে পদক বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, কথায় আছে, যে দেশে গুণীর কদর নেই, সেদেশে গুণীর জন্ম হয় না।তিনি বলেন, তাঁর সরকার গুণীজনদের তাদের প্রাপ্য সম্মান প্রদানের বিষয়ে আন্তরিক। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সাহিত্য-শিক্ষা-কৃষি-ক্রীড়া-প্রযুক্তিসহ উদ্ভাবনাময় সকল ক্ষেত্রে কৃতিত্বপূর্ণ অর্জনের অধিকারী ব্যক্তিত্বদের পুরস্কৃত ও সম্মানিত করে আসছি। এরই অংশ হিসেবে আজকের এই একুশে পদক প্রদান অনুষ্ঠান। রাষ্ট্রীয় এ পদকের সঙ্গে জড়িয়ে আছে অমর একুশের নাম উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, যে মহান ভাষা শহীদগণ নিজেদের জীবনের বিনিময়ে একুশের সংগ্রামী ইতিহাস রচনা করেছেন, তাঁদের ত্যাগের দিকে লক্ষ্য রেখে আপনাদের মেধাকে দেশের উন্নয়ন, সমৃদ্ধ ও সার্বিক বিকাশের কাজে লাগানোর বিনীত আহ্বান জনাই।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর দেশের পুনর্গঠনে দেশের বুদ্ধিজীবী ও মেধাবীদের দায়িত্ব অর্পণ করেছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর পরিকল্পনা কমিশনে তাই দেশসেরা অর্থনীতিবিদ, উন্নয়ন-গবেষক, সমাজ-বিশ্লেষকদের সমাবেশ ঘটেছিল। বঙ্গবন্ধু যথার্থই উপলব্ধি করেছিলেন, দেশের মেধাবী নাগরিকগণই তাঁদের দায়বদ্ধ ভাবনার মাধ্যমে নতুন রাষ্ট্রের ভিত্তি গড়তে পারেন।

Comments

Popular posts from this blog

দেশের ৩১টি জেলার ও ৭৮টি উপজেলায় বিআরটিসির বাস চলাচল করছে

গাইবান্ধা-১ থেকে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পেলেন ব্যারিষ্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী

প্রান্তিক চাষীদের কৃষি প্রণোদনা হিসেবে ৩২ কোটি ৯০ লাখ টাকা