আগামী জাতীয় নির্বাচনের যাওয়ার আগে বিএনপি লেভেল প্লেইং ফিল্ড চায় বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

আগামী জাতীয় নির্বাচনের যাওয়ার আগে বিএনপি লেভেল প্লেইং ফিল্ড চায় বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার বিকালে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একথা বলেন। গতকাল অবৈধ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার মিথ্যায় ভরা সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে আজকে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনের সম্পূর্ণ বক্তব্য নিম্নরূপ।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ আসসালামু আলাইকুম।
প্রধানমন্ত্রী গতকাল জাতির উদ্দেশে তাঁর ভাষণের শুরুতেই জাতিকে ভ্রান্ত তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন। তিনি বিপুল ম্যান্ডেট নিয়ে ২০১৪এর ৫ই জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠনের কথা বলেছেন, যা সঠিক নয়। ২০১৪ এর ৫ জানুয়ারি ১৫৩ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষনা করা হয়েছিল। ৫% ভোটার ভোট কেন্দ্রে যায়নি। সারা দেশের মানুষ এবং বর্হিবিশ্ব সেই নির্বাচনকে গ্রহণ করেনি। আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিশন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে ক্ষমতা দখল করেছিল সম্পূর্ণ অনৈতিক ভাবে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানকে বন্ধুকের মুখে জিম্মি করে নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল। তিনি এবং আরও অনেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করলেও সেটা গ্রহণ করা হয়নি। সেই সময়কার তামাশা ও নাটক সকলের মনে থাকার কথা।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে এমন ভাবে চিত্রায়িত করেছেন যে সকল উন্নয়ন তাঁর দুই দফার সরকারের ৮ বৎসরেই হয়েছে। যা সঠিক নয়। অর্থনৈতিক উন্নয়ন একটি চলমান প্রক্রিয়া। ভিত্তি তৈরী করতে হয়, এরপর একটি একটি করে ইট লাগাতে হয়। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে দুঃশাসন ও দূর্নীতির কারনে এবং ভ্রান্ত নীতির কারনে যে অচল হয়ে পড়েছিল, বিদেশীরা তলা বিহীন ঝুড়ির সঙ্গে তুলনা করেছিল, দূর্ভিক্ষে লক্ষ মানুষ মারা গিয়েছিল, সেই অর্থনীতিকে সজীব ও সচল করে তুলেছিলেন স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ ঘুরে দাড়িয়েছিলো। বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনে অবরুদ্ধ অর্থনীতিকে তিনি মুক্ত করেছিলেন। বেসরকারী বিনিয়োগ, মুক্তবাজার অর্থনীতি, কৃষিতে নতুন প্রাণের সঞ্চার, শিল্পে ৩ শিফটের কাজ, সর্বপ্রথম পোশাক শিল্পের উদ্যোগ ও বিদেশে বাজার সৃষ্টি, মধ্যপ্রাচ্যে শ্রম বাজার সৃষ্টি বাংলাদেশের অর্থনীতিকে নতুন এবং সচল অধ্যায়ে নিয়ে যায়। সেটাই ছিলো ভিত্তি। বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান অর্থনীতিকে সচল করে। নতুন ও তরুণ উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসায় বাংলাদেশ আবার স্বনির্ভর বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। পরবর্তী গণতান্ত্রিক, অগণতান্ত্রিক, বৈধ-অবৈধ প্রায় সব সরকারই কমবেশী উন্নয়নে কাজ করে।
ক্ষুদ্র্ঋণ, গ্রামীন অবকাঠামো নির্মাণ, ইনফরমাল সেক্টরে বিনিয়োগ গ্রামীণ অর্থনীতিতে প্রাণের সঞ্চার করে। একদিকে নারী ক্ষমতায়ন অন্যদিকে নারীদের আনসার, ভিডিপি, পুুলিশ ও অন্যান্য সেক্টরে কর্মসংস্থান অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করে । পৃথক মহিলা মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা এই প্রক্রিয়াকে আরও এগিয়ে নিয়ে যায়।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে যে তিনটি সরকার গঠিত হয় সেই তিনটি সরকারের সময়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন নতুন মাত্রা পায়। দ্রুত সময়ের মধ্যে দারিদ্রবিমোচন, মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট লক্ষ মাত্রা অর্জন, জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন, দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কাজগুলো কোন একটি বিশেষ সরকারের একক প্রচেষ্টার ফসল নয়। প্রধানমন্ত্রীর দাবী তাই অনৈতিক এবং শুধুমাত্র আত্মতুষ্টির প্রচেষ্টা।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ, গত ৮ বৎসরে ধনী আরও ধনী, গরীব আরও গবীব হয়েছে। Plutocratic শাসনের ফলে প্রাতিষ্ঠানিক ভঙ্গুরতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
নজীর বিহীন দলীয় করণ, প্রশাসন ও অন্যান্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান গুলোকে দুর্বল ও ক্ষয়িষ্ণু করেছে। জবাবদিহিতার অভাব, অকার্যকর পালার্মেন্ট দূর্নীতিকে লাগামহীন পর্যায়ে নিয়ে গেছে।
রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে অর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় ধ্বংসের মুখে। শেয়ার মার্কেট লুঠ, ব্যাংক লুঠ, দলীয় ব্যক্তিদের জন্য ঋণ সুবিধা ও ফেরত না দেবার প্রবণতা একনায়ক সরকারের সমর্থক ও তল্পীবাহকেরা বা লাগামহীন ভাবে রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার ও গণলুঠ বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ভেতরে ভেতরে অন্তঃসার শূন্য করে ফেলছে। শুধু মাত্র আর এম জি সেক্টরের আয় ও রেমিন্টেন্সের কারনে যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়লেই অর্থনীতি চাংগা হয় না। সত্যিকার বিনিয়োগ অর্থাৎ ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পে বিনিয়োগের জন্য মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানী কত পরিমান বেড়েছে না কমেছে সেটা দেখা অত্যন্ত জরুরী। > সংক্ষিপ্ত <

Comments

Popular posts from this blog

দেশের ৩১টি জেলার ও ৭৮টি উপজেলায় বিআরটিসির বাস চলাচল করছে

গাইবান্ধা-১ থেকে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পেলেন ব্যারিষ্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী

প্রান্তিক চাষীদের কৃষি প্রণোদনা হিসেবে ৩২ কোটি ৯০ লাখ টাকা