দুর্নীতি :১৫-০৬-২০১৬

পিরোজপুর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মঠবাড়িয়া উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে সাড়ে ২৩ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মঠবাড়িয়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে নয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানেরা এ দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মঠবাড়িয়ার সাপলেজা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল রাশেদ। তিনি বলেন, উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের প্রতিনিধি নিয়োগের জন্য জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খন্দকার আলাউদ্দিন আল আজাদ ১৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছ থেকে ২৩ লাখ ৪৯ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন।
লিখিত বক্তব্যে আবদুল রাশেদ বলেন, শিক্ষক নিয়োগে মাউশির মহাপরিচালকের প্রতিনিধি নিয়োগের জন্য জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আলগী বালিকা দাখিল মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ৩ লাখ, সোনাখালী মুন্সী আবদুল কাদের মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২ লাখ ৬০ হাজার, বিবিএস মাধ্যমিক বিদ্যালয় আড়াই লাখ, তুষখালী আদর্শ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ২ লাখ, উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় দেড় লাখ, এনসি তমোজিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় দেড় লাখ, খায়ের ঘটিচোরা দাখিল মাদ্রাসা দেড় লাখ, কাঁকড়াবুনিয়া দাখিল মাদ্রাসা দেড় লাখ, গোলবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় দেড় লাখ, তুষখালী ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসা দেড় লাখ, আলগী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১ লাখ, ছোট শিংগা দাখিল মাদ্রাসা ৫১ হাজার, পশ্চিম ছোট মাছুয়া ছালেহিয়া দাখিল মাদ্রাসা ৪০ হাজার, নূরজাহান মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২০ হাজার, উলুবাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসা ৫০ হাজার, গোপখালী দাখিল মাদ্রাসা ৮০ হাজার, বেতমোর রাজপাড়া ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৮ হাজার ও পশ্চিম মিঠাখালী দাখিল মাদ্রাসা থেকে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া) আসনের সাংসদ রুস্তম আলী ফরাজী সম্প্রতি জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খন্দকার আলাউদ্দিন আল আজাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে মাউশির মহাপরিচালকের বরাবর আধা সরকারিপত্র (ডিও লেটার) দিয়েছেন। সাংসদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে খন্দকার আলাউদ্দিন আল আজাদকে বদলির আদেশ দেন মহাপরিচালক। এরপর খন্দকার আলাউদ্দিন আল আজাদ সাংসদের বাসায় গিয়ে সমঝোতা করে বদলির আদেশ স্থগিত করার চেষ্টা চালান।
উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিন, তুষখালী আদর্শ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের আকরামুল ইসলাম ও বেতমোর রাজপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম ফয়সল বলেন, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে ঘুষ না দিলে কাজ হতো না। এ কারণে তাঁরা ঘুষ দিতে বাধ্য হয়েছেন।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খন্দকার আলাউদ্দিন আল আজাদ বলেন, ‘মঠবাড়িয়া আসনের সাংসদের এক আত্মীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে সভাপতির বিরোধ চলছে। প্রধান শিক্ষককে বাদ দিয়ে বিদ্যালয়ের উন্নয়নকাজ সভাপতি নিজে করার চেষ্টা করছেন। এসব বিষয়ে সাংসদের নির্দেশ পালন না করে বিধি অনুযায়ী কাজ করায় তিনি (সাংসদ) আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। জেলার সাতটি উপজেলার ছয়টি উপজেলার শিক্ষকেরা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারেননি। শুধু মঠবাড়িয়ার কিছু শিক্ষক প্রভাবশালী কোনো ব্যক্তির নির্দেশে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন।’
source - prothom-alo online

Comments

Popular posts from this blog

দেশের ৩১টি জেলার ও ৭৮টি উপজেলায় বিআরটিসির বাস চলাচল করছে

গাইবান্ধা-১ থেকে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পেলেন ব্যারিষ্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী

প্রান্তিক চাষীদের কৃষি প্রণোদনা হিসেবে ৩২ কোটি ৯০ লাখ টাকা