বাণিজ্যিক ভাবনা থেকেই শিক্ষার্থীদের কাঁধে অতিরিক্ত পাঠ্যবইয়ের বোঝা তুলে দিচ্ছে স্কুলগুলো
শিশু শিক্ষার্থীদের ভারী ব্যাগ বহন সুস্বাস্থ্যের অন্তরায়। এ কারণে শিশুর শরীরের ওজনের ১০ শতাংশের বেশি ওজনের ব্যাগ বহনের ওপর হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। অথচ বাণিজ্যিক ভাবনা থেকেই শিক্ষার্থীদের কাঁধে অতিরিক্ত পাঠ্যবইয়ের বোঝা তুলে দিচ্ছে স্কুলগুলো।
কোন শ্রেণিতে কোন বই পড়তে হবে তার নির্দিষ্ট তালিকা দিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। এর বাইরে কোন বই পাঠ্য না করার জন্য আইনও রয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন, নির্দিষ্ট বইয়ের চেয়ে কমপক্ষে ৩ থেকে ১৫টি পর্যন্ত বেশি বই পাঠ করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। অথচ এসব স্কুল তদারকির দায়িত্বে থাকা প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর নীরব ভূমিকা পালন করছে।
কিন্ডারগার্টেনের শিশুরা সরকারের বিনামূল্যের বই পায়। কিন্তু নির্ধারিত বইয়ের বাইরে সেখানে ১০ থেকে ১৫টি বই বেশি পড়তে হয়। অথচ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বিনামূল্যের বই দিয়েই দায়িত্ব শেষ করে। বাস্তবে কী ঘটছে তা নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না। রাজধানীর একাধিক স্কুলে গিয়ে দেখা গেছে, দ্বিতীয় শ্রেণিতে বোর্ড অনুমোদিত তিনটি বইয়ের বাইরে তাদের রয়েছে ৬টি অতিরিক্ত বই। এছাড়া খাতা, খাবার, পানির বোতল মিলে শিক্ষার্থীদের ব্যাগের ওজন দাঁড়ায় চার থেকে সাড়ে ৪ কেজির বেশি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই ওজন আরো বেশি হয়।
জাতীয় শিক্ষাক্রম অনুসারে, দ্বিতীয় শ্রেণিতে তিনটি, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে শিশুদের সর্বোচ্চ ছয়টি বই পড়াতে হবে। এর বাইরে কোনো বই পাঠ্য করা যাবে না। অথচ রাজধানীর বিভিন্ন স্কুলে ১৫টি পর্যন্ত বই পড়তে হচ্ছে দ্বিতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের। এভাবে সহায়ক বই পাঠ্য করা একদিকে যেমন এনসিটিবির আদেশ না মানা, অন্যদিকে আদালতের নির্দেশ অমান্য করা।
২০১৬ সালের এক রায়ে হাইকোর্ট শিশু শিক্ষার্থীদের ব্যাগের ওজন কি পরিমাণ হবে সে বিষয়ে সরকারকে আইন প্রণয়ণের নির্দেশ দিয়েছিল। একই সঙ্গে হাইকোর্ট শিশুর শরীরের ওজনের ১০ শতাংশের বেশি ওজনের ব্যাগ বহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর ২০১৪ সালের ১১ ডিসেম্বর একটি পরিপত্র জারি করে। ওই পরিপত্রে বলা হয়, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্য পুস্তক বোর্ড বিদ্যালয়গামী ছেলে/মেয়েদের জন্য যে সকল বই অনুমোদন করেছে তা পরিবহনে কোনো ছেলে/মেয়ের সমস্যা হওয়ার কথা নয়। যে সব ছাত্র/ছাত্রী ব্যাগে বই বহন করে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করে তার ওজন তাদের বয়সের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ অর্থাত্ অনুমোদিত বই-পুস্তকের ওজন একজন শিক্ষার্থীর ওজনের এক-দশমাংশের বেশি নয়। অথচ বাস্তব চিত্র ভিন্ন।
বাড়তি বই দেওয়ার পেছনে অনৈতিক কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। প্রকাশনা সংস্থাগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে কমিশন দিলেই সংশ্লিষ্ট স্কুলে ওই প্রকাশনীর বই পাঠ্য হয়ে যায়। বইপ্রতি স্কুল কর্তৃপক্ষ ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমিশন পায়।
এ ব্যাপারে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) ড. মিয়া ইনামুল হক সিদ্দিকী বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এনসিটিবির নির্ধারিত বই পড়াতে হবে। এর বাইরে কোনো বই কোনোভাবেই পাঠ্য করা যাবে না, করলে তা হবে আইনের লঙ্ঘন। একজন শিক্ষকের বছরে একটি বিষয়ে ১৮৯ দিন (৫০ মিনিটে ঘণ্টা হিসাব করে) পড়ানোর সুযোগ আছে। এ বিষয়টি বিবেচনা করেই বই প্রণয়ণ করা হয়েছে। অনুমোদনহীন মোটা বই শ্রেণি কক্ষে পাঠ্য করার বিষয়টি নিশ্চয়ই ব্যবসার উদ্দেশ্যে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, নিছক ব্যবসার উদ্দেশ্যেই এভাবে বই পাঠ্য করা হয়। এভাবে চলতে পারে না। আমরা এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করবো।
শিশু শিক্ষার্থীদের ভারী ব্যাগ বহন সুস্বাস্থ্যের অন্তরায়। এ কারণে শিশুর শরীরের ওজনের ১০ শতাংশের বেশি ওজনের ব্যাগ বহনের ওপর হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। অথচ বাণিজ্যিক ভাবনা থেকেই শিক্ষার্থীদের কাঁধে অতিরিক্ত পাঠ্যবইয়ের বোঝা তুলে দিচ্ছে স্কুলগুলো।
কোন শ্রেণিতে কোন বই পড়তে হবে তার নির্দিষ্ট তালিকা দিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। এর বাইরে কোন বই পাঠ্য না করার জন্য আইনও রয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন, নির্দিষ্ট বইয়ের চেয়ে কমপক্ষে ৩ থেকে ১৫টি পর্যন্ত বেশি বই পাঠ করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। অথচ এসব স্কুল তদারকির দায়িত্বে থাকা প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর নীরব ভূমিকা পালন করছে।
কিন্ডারগার্টেনের শিশুরা সরকারের বিনামূল্যের বই পায়। কিন্তু নির্ধারিত বইয়ের বাইরে সেখানে ১০ থেকে ১৫টি বই বেশি পড়তে হয়। অথচ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বিনামূল্যের বই দিয়েই দায়িত্ব শেষ করে। বাস্তবে কী ঘটছে তা নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না। রাজধানীর একাধিক স্কুলে গিয়ে দেখা গেছে, দ্বিতীয় শ্রেণিতে বোর্ড অনুমোদিত তিনটি বইয়ের বাইরে তাদের রয়েছে ৬টি অতিরিক্ত বই। এছাড়া খাতা, খাবার, পানির বোতল মিলে শিক্ষার্থীদের ব্যাগের ওজন দাঁড়ায় চার থেকে সাড়ে ৪ কেজির বেশি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই ওজন আরো বেশি হয়।
জাতীয় শিক্ষাক্রম অনুসারে, দ্বিতীয় শ্রেণিতে তিনটি, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে শিশুদের সর্বোচ্চ ছয়টি বই পড়াতে হবে। এর বাইরে কোনো বই পাঠ্য করা যাবে না। অথচ রাজধানীর বিভিন্ন স্কুলে ১৫টি পর্যন্ত বই পড়তে হচ্ছে দ্বিতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের। এভাবে সহায়ক বই পাঠ্য করা একদিকে যেমন এনসিটিবির আদেশ না মানা, অন্যদিকে আদালতের নির্দেশ অমান্য করা।
২০১৬ সালের এক রায়ে হাইকোর্ট শিশু শিক্ষার্থীদের ব্যাগের ওজন কি পরিমাণ হবে সে বিষয়ে সরকারকে আইন প্রণয়ণের নির্দেশ দিয়েছিল। একই সঙ্গে হাইকোর্ট শিশুর শরীরের ওজনের ১০ শতাংশের বেশি ওজনের ব্যাগ বহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর ২০১৪ সালের ১১ ডিসেম্বর একটি পরিপত্র জারি করে। ওই পরিপত্রে বলা হয়, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্য পুস্তক বোর্ড বিদ্যালয়গামী ছেলে/মেয়েদের জন্য যে সকল বই অনুমোদন করেছে তা পরিবহনে কোনো ছেলে/মেয়ের সমস্যা হওয়ার কথা নয়। যে সব ছাত্র/ছাত্রী ব্যাগে বই বহন করে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করে তার ওজন তাদের বয়সের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ অর্থাত্ অনুমোদিত বই-পুস্তকের ওজন একজন শিক্ষার্থীর ওজনের এক-দশমাংশের বেশি নয়। অথচ বাস্তব চিত্র ভিন্ন।
বাড়তি বই দেওয়ার পেছনে অনৈতিক কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। প্রকাশনা সংস্থাগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে কমিশন দিলেই সংশ্লিষ্ট স্কুলে ওই প্রকাশনীর বই পাঠ্য হয়ে যায়। বইপ্রতি স্কুল কর্তৃপক্ষ ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমিশন পায়।
এ ব্যাপারে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) ড. মিয়া ইনামুল হক সিদ্দিকী বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এনসিটিবির নির্ধারিত বই পড়াতে হবে। এর বাইরে কোনো বই কোনোভাবেই পাঠ্য করা যাবে না, করলে তা হবে আইনের লঙ্ঘন। একজন শিক্ষকের বছরে একটি বিষয়ে ১৮৯ দিন (৫০ মিনিটে ঘণ্টা হিসাব করে) পড়ানোর সুযোগ আছে। এ বিষয়টি বিবেচনা করেই বই প্রণয়ণ করা হয়েছে। অনুমোদনহীন মোটা বই শ্রেণি কক্ষে পাঠ্য করার বিষয়টি নিশ্চয়ই ব্যবসার উদ্দেশ্যে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, নিছক ব্যবসার উদ্দেশ্যেই এভাবে বই পাঠ্য করা হয়। এভাবে চলতে পারে না। আমরা এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করবো।
Comments
Post a Comment